করোনাভাইরাস: তামাক নিষিদ্ধের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি

0
438

কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে’ সব ধরনের তামাকজাত দ্রব্যের বিপণন ও বিক্রি সাময়িকভাবে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন দেশের ১০০ জন জ্যেষ্ঠ নাগরিক।

তাদের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি চিঠি বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দেওয়া হয় বলে তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া এই চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক অবসপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার আব্দুল মালিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক,  অধ্যাপক আবুল বারকাত, ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান, সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, টিভি টুডে’র এডিটর ইন চিফ মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, একুশে পদকপ্রাপ্ত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. একে আজাদ খান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু, দেশ টিভির সম্পাদক সুকান্ত গুপ্ত অলক, বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক আবু তাহের, সঙ্গীত শিল্পী ফরিদা পারভীন প্রমুখ।

তামাকে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং করেনাভাইরাস সংক্রমণ সহায়ক দাবি করে তা নিষিদ্ধ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে।

এতে বলা হয়, “বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণ করে বাংলাদেশ করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সব ধরনের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, তামাকজাত দ্রব্য ফুসফুসের সংক্রমণ ও অসুস্থতা বাড়ায় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। ফলে তামাক ব্যবহারের কারণে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া এবং গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

“এসব ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকা ও বতসোয়ানা ইতোমধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ের ওপর যে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সেই বৈশ্বিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দেশে সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সকল তামাকজাত দ্রব্য বিপণন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানানো হয়।”

চিঠিতে বলা হয়, “তামাক ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ লাখ ২৬ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। বর্তমানে ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন এবং প্রায় ৪ কোটি ১০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। দেশে এই বিপুল জনগোষ্ঠী বর্তমানে মারাত্মকভাবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

“এ ধরনের রোগীর চিকিৎসায় অনেক সময় কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যবস্থার দরকার হয় এবং বর্তমানে এই মহামারীর মধ্যে রোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামাদির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। সুতরাং তামাকজাত দ্রব্য বিপণন ও বিক্রয় অব্যাহত থাকলে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হবে সেইসাথে করোনাভাইরাস সংকট আরো ঘণীভূত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।”

তামাকবিরোধী সংগঠন বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি, বিসিসিপি, এসিডি, ইপসা, এইড ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট, বিএনটিটিপি, বিটা, গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটি, নাটাব, প্রত্যাশা, টিসিআরসি, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, উফাত, তাবিনাজ, ভয়েস, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স- আত্মা ও প্রজ্ঞা সম্মিলিতভাবে এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here