নিজেদের ব্যাটিং ব্যর্থতা ঢাকতে টসে জিতে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বলেছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটিং ইউনিট আরও ভালো। দারুণ শুরু করে অধিনায়কের কথা রেখেছিলেন দুই ওপেনার শেখ মেহেদি হাসান ও মোহাম্মদ নাইম। তবে সময় যত গড়িয়েছে ততই ব্যাটিং ব্যর্থতা ফুটে ওঠেছে বাংলাদেশের।
শেষ পর্যন্ত ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ১২২ রানে থামে স্বাগতিকরা। ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হলেও পুরো সিরিজের মতো আলো ছড়িয়েছেন বোলাররা। সাকিব আল হাসান ও নাসুম আহমেদদের কল্যাণে অস্ট্রেলিয়াকে মাত্র ৬২ রানে অল আউট করে বাংলাদেশ। ৬০ রানের জয়ে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করে নিলো মাহমুদউল্লাহর দল।
জয়ের জন্য ১২৩ রানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরে ফেরেন ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ান। নাসুমের শট অব লেন্থে বলে লাইন মিস করে বোল্ড আউট হয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
ইনিংসের অষ্টম ওভারে বল করতে আসেন সাকিব আল হাসান। এসেই নিজের দ্বিতীয় বলে অজি অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েডকে বোল্ড করে আউট করেছেন এই বাঁহাতি স্পিনার। ওয়েডের ব্যাট থেকে ২২ বলে ২২ রানের ইনিংস এসেছে। সাকিবের পর মাহমুদউল্লাহও বোলিংয়ে এসেই উইকেট নিয়েছেন। তিনি বেন ম্যাকডারমটকে ফিরতি ক্যাচ নিয়ে সাজঘরের পথ দেখিয়েছেন। এরপর মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন মাত্র ৩ রান করা অ্যালেক্স ক্যারিকে বোল্ড করে আউট করেন। এরপর একই সমান রান করা ময়েজেস হেনরিকসকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন সাইফউদ্দিন।
এরপর সাকিব ১ রান করা অ্যাস্টন টার্নারকে আউট করে টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ উইকেট ও ১৭০০ এর বেশি রান করার মাইলফলকে পৌঁছান। সাইফউদ্দিন ২ রান করা আগারকে বোল্ড করলে আর ম্যাচে ফেরা হয়নি অজিদের।
এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১২২ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২৩ রান করেছেন ওপেনার নাইম শেখ।
এই ম্যাচে টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ব্যাটিংয়ে সৌম্য সরকারের পরিবর্তে ওপেনিংয়ে নাইমের সঙ্গে পাঠানো হয় শেখ মেহেদিকে। শুরু থেকেই রানের চাকা সচল রাখেন এই দুই ব্যাটসম্যান। দুজনই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে অ্যাস্টন টার্নারকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে অ্যাস্টন আগারের হাতে শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন মেহেদি।
এর ফলে তার ১২ বলে ১৩ রানের ইনিংস শেষ হয়। আর ৪২ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ওপেনিং জুটির। পাওয়ার প্লের ৬ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১ উইকেট হারিয়ে ৪৬ রান। আগের বলেই ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে এসে টপ এজ হয়েও অল্পের জন্য জীবন পেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান।
এর পরের বলেই ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ানকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে আগারকে ক্যাচ দিয়েছেন ২৩ রান নাইম। এরপর সাকিবও বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি। তিনি অ্যাডাম জাম্পার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন মাত্র ১১ রান করে। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ১৯ রান করে আগারের বলে তার হাতেই ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হয়েছেন।
আগের ম্যাচগুলোতে ওপেনিংয়ে খেললেও এই ম্যাচে মিডল অর্ডারে পাঠানো হয়েছিল সৌম্য সরকারকে। এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান নতুন জায়গায় ব্যাট করতে নেমেও ব্যর্থ হয়েছেন। সৌম্য লং অফ দিয়ে ক্রিস্টিয়ানের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে টার্নারের হাতে ক্যাচ দেন ১৬ রান করে।
শেষদিকে নুরুল হাসান সোহান মাত্র ৮ রান করে নাথান এলিসের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন। ইনিংসের শেষ ওভারে ১০ রান করা আফিফ হোসেন ধ্রুবকেও মিচেল মার্শের ক্যাচ বানিয়ে আউট করেন এলিস। শূন্য রানে রান আউট হয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। শেষ পর্যন্ত মোসাদ্দেক হোসেন ৭ বলে ৪ ও কোনো রান না করেই অপরাজিত থাকেন মুস্তাফিজুর রহমান।